মেয়র পদ ফিরে পাওয়া নিয়ে সমালোচনা, জবাব দিলেন ইশরাক

ছবি সংগৃহীত

 

ডেস্ক রিপোর্ট :ইশরাক হোসেনকে গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র হিসেবে রায় দিয়েছে আদালত, যা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা সমালোচনা হচ্ছে। এবার এর জাবাব দিয়েছেন ইশরাক। তিনি জানান, ভোটে হারেননি তিনি, তাকে হারিয়ে দেওয়া হয়েছিল। যে কারণে ২০২০ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের পরই আইন মেনে তিনি মামলা করেছিলেন। দীর্ঘ পাঁচ বছর আইনি লড়াইয়ের পর তিনি এখন ন্যায়বিচার পেয়েছেন।

 

আজ শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ইশরাক হোসেন এসব কথা বলেন। এদিন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে রিকশা–ভ্যান ও অটোচালকদের মধ্যে ঈদ উপহার দিতে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে দলটি।

অনুষ্ঠানে মেয়র ইশরাক বলেন, ‘দীর্ঘ প্রায় পাঁচ বছর আইনি লড়াইয়ের পর গতকাল রায় পেয়েছি। এই রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার পেয়েছি। তবে এই রায় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন জায়গায় কেউ কেউ বোঝার কমতি থাকার কারণে যে প্রতিক্রিয়া দিচ্ছেন, তাদের জানার ক্ষেত্রে কিছু তথ্যের ঘাটতি রয়েছে।’

 

ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘অনেকেই হয়তো মনে করছে যে, ৫ আগস্টের পর এই মামলা দায়ের করা হয়েছে বা আমরা হয়তো এরপর এসে (২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর) এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছি। তাদের উদ্দেশে বলতে চাই যে, স্থানীয় সরকার নির্বাচনের আইন অনুযায়ী নির্বাচন হওয়ার পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে অভিযোগ করতে হয় এবং সেই ৩০ দিনের মধ্যেই মামলাটি করা হয়েছিল। পরবর্তী ১৮০ দিনের মধ্যে এই মামলা নিষ্পত্তি হওয়ার আইনি বিধান থাকলেও বিগত ফ্যাসিবাদী হাসিনা সরকারের আমলে এটিকে বাধাগ্রস্ত করা হয়। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী তাপস এই মামলা বাতিল করার জন্য উচ্চ আদালতে এবং নিম্ন আদালতে চাপ প্রয়োগ করেছেন। উচ্চ আদালতে আবেদন করে মামলার শুনানি বন্ধ করে রেখেছিলেন।’

 

গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতনের পর ওই মামলার শুনানি শুরু হয়। যেখানে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া নিশ্চিত করে মামলার কার্যক্রম পরিচালনা করেন বলে জানিয়ে ইশরাক বলেন, এই মামলায় সাক্ষী–শুনানি হয়েছে, যুক্তিতর্ক হয়েছে এবং পরবর্তী সময় গতকাল কাঙ্ক্ষিত রায় দেওয়া হয়েছে।

 

তিনি আরও বলেন, ‘ন্যায়বিচার চাওয়ার কারণে যদি কোনো গোষ্ঠী এটাকে অন্যায়–অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করে আমার প্রতি বৈষম্য করে, যদি ন্যায়বিচার চাওয়ার জন্য এখন অপরাধী হয়ে যাই, তাহলে এ ক্ষেত্রে আমার কিছু বলার নাই, করারও নাই। জনগণই সেটার বিচার করবে। আমি এখানে সম্পূর্ণ ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য কার্যক্রম করেছি।’

 

এই রায় আরও ৫ বছর আগে, ১৮০ দিনের মধ্যে হওয়ার কথা ছিল বলে জানান ইশরাক হোসেন। তিনি বলেন, ‘স্বৈরাচার শেখ হাসিনার আমলে এই রায় দেওয়া হয়নি। এখন আমি আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে রায়টি পেয়েছি। রায় পাওয়ার পর গতকালও বলেছি এটা দলের সর্বোচ্চ ফোরাম সিদ্ধান্ত নেবে। সব দিক বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সেই অনুযায়ী আমি আমার পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।’

 

সমালোচকদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, ‘তারা ফোকাস করছে বিএনপির প্রার্থী মেয়র পদে যাচ্ছেন। আমরা যে একটি আইনি উদাহরণ ও দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেলাম, সেটার জন্য তাদের আমাদের ধন্যবাদ দেওয়া উচিত ছিল এ কারণে যে একটা আইনের শাসন, এর জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এটা হলো আমাদের মূল উদ্দেশ্য, মূল লক্ষ্য।’

 

ইশরাক বলেন, ‘আমি কিন্তু হারি নাই। আমাকে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে। অতএব, সেটা কাগজে–কলমে প্রতিষ্ঠা পাক, সেটাই আমাদের লক্ষ্য ছিল।’

 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। আরও উপস্থিত ছিলেন দলের যুগ্ম মহাসচিব আবদুস সালাম আজাদ ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী রফিক ও মাহবুবুল ইসলাম।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» বাসের ধাক্কায় ইজিবাইকে নারীর মৃত্যু

» ‘এবার বাঁচার আশা নেই’ : ধ্বংসস্তূপে বসে গাজাবাসীর শেষ বাক্য

» ফিলিস্তিনের ঐতিহাসিক ইব্রাহিমি মসজিদে তালা ঝুলিয়ে দিল ইসরাইল

» ফিলিস্তিনের মাটিতেও একদিন জুলাই আসবে : আখতার হোসেন

» ছয় মাসের মধ্যে বিদেশি বিনিয়োগ আনার চেষ্টা চলছে: আশিক চৌধুরী

» ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’ কর্মসূচির সঙ্গে সংহতি জানিয়ে আসিফের কর্মবিরতি

» মার্চ মাসে সর্বোচ্চ লেনদেনের রেকর্ড করেছে নগদ

» ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় নির্বিচারে হামলা ও গণহত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ

» নওগাঁয় রহস্যজনকভাবে দুই ভাই-বোনের মরদেহ উদ্ধার

» ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : dhakacrimenewsbd@gmail.com

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

মেয়র পদ ফিরে পাওয়া নিয়ে সমালোচনা, জবাব দিলেন ইশরাক

ছবি সংগৃহীত

 

ডেস্ক রিপোর্ট :ইশরাক হোসেনকে গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র হিসেবে রায় দিয়েছে আদালত, যা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা সমালোচনা হচ্ছে। এবার এর জাবাব দিয়েছেন ইশরাক। তিনি জানান, ভোটে হারেননি তিনি, তাকে হারিয়ে দেওয়া হয়েছিল। যে কারণে ২০২০ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের পরই আইন মেনে তিনি মামলা করেছিলেন। দীর্ঘ পাঁচ বছর আইনি লড়াইয়ের পর তিনি এখন ন্যায়বিচার পেয়েছেন।

 

আজ শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ইশরাক হোসেন এসব কথা বলেন। এদিন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে রিকশা–ভ্যান ও অটোচালকদের মধ্যে ঈদ উপহার দিতে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে দলটি।

অনুষ্ঠানে মেয়র ইশরাক বলেন, ‘দীর্ঘ প্রায় পাঁচ বছর আইনি লড়াইয়ের পর গতকাল রায় পেয়েছি। এই রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার পেয়েছি। তবে এই রায় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন জায়গায় কেউ কেউ বোঝার কমতি থাকার কারণে যে প্রতিক্রিয়া দিচ্ছেন, তাদের জানার ক্ষেত্রে কিছু তথ্যের ঘাটতি রয়েছে।’

 

ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘অনেকেই হয়তো মনে করছে যে, ৫ আগস্টের পর এই মামলা দায়ের করা হয়েছে বা আমরা হয়তো এরপর এসে (২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর) এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছি। তাদের উদ্দেশে বলতে চাই যে, স্থানীয় সরকার নির্বাচনের আইন অনুযায়ী নির্বাচন হওয়ার পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে অভিযোগ করতে হয় এবং সেই ৩০ দিনের মধ্যেই মামলাটি করা হয়েছিল। পরবর্তী ১৮০ দিনের মধ্যে এই মামলা নিষ্পত্তি হওয়ার আইনি বিধান থাকলেও বিগত ফ্যাসিবাদী হাসিনা সরকারের আমলে এটিকে বাধাগ্রস্ত করা হয়। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী তাপস এই মামলা বাতিল করার জন্য উচ্চ আদালতে এবং নিম্ন আদালতে চাপ প্রয়োগ করেছেন। উচ্চ আদালতে আবেদন করে মামলার শুনানি বন্ধ করে রেখেছিলেন।’

 

গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতনের পর ওই মামলার শুনানি শুরু হয়। যেখানে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া নিশ্চিত করে মামলার কার্যক্রম পরিচালনা করেন বলে জানিয়ে ইশরাক বলেন, এই মামলায় সাক্ষী–শুনানি হয়েছে, যুক্তিতর্ক হয়েছে এবং পরবর্তী সময় গতকাল কাঙ্ক্ষিত রায় দেওয়া হয়েছে।

 

তিনি আরও বলেন, ‘ন্যায়বিচার চাওয়ার কারণে যদি কোনো গোষ্ঠী এটাকে অন্যায়–অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করে আমার প্রতি বৈষম্য করে, যদি ন্যায়বিচার চাওয়ার জন্য এখন অপরাধী হয়ে যাই, তাহলে এ ক্ষেত্রে আমার কিছু বলার নাই, করারও নাই। জনগণই সেটার বিচার করবে। আমি এখানে সম্পূর্ণ ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য কার্যক্রম করেছি।’

 

এই রায় আরও ৫ বছর আগে, ১৮০ দিনের মধ্যে হওয়ার কথা ছিল বলে জানান ইশরাক হোসেন। তিনি বলেন, ‘স্বৈরাচার শেখ হাসিনার আমলে এই রায় দেওয়া হয়নি। এখন আমি আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে রায়টি পেয়েছি। রায় পাওয়ার পর গতকালও বলেছি এটা দলের সর্বোচ্চ ফোরাম সিদ্ধান্ত নেবে। সব দিক বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সেই অনুযায়ী আমি আমার পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।’

 

সমালোচকদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, ‘তারা ফোকাস করছে বিএনপির প্রার্থী মেয়র পদে যাচ্ছেন। আমরা যে একটি আইনি উদাহরণ ও দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেলাম, সেটার জন্য তাদের আমাদের ধন্যবাদ দেওয়া উচিত ছিল এ কারণে যে একটা আইনের শাসন, এর জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এটা হলো আমাদের মূল উদ্দেশ্য, মূল লক্ষ্য।’

 

ইশরাক বলেন, ‘আমি কিন্তু হারি নাই। আমাকে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে। অতএব, সেটা কাগজে–কলমে প্রতিষ্ঠা পাক, সেটাই আমাদের লক্ষ্য ছিল।’

 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। আরও উপস্থিত ছিলেন দলের যুগ্ম মহাসচিব আবদুস সালাম আজাদ ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী রফিক ও মাহবুবুল ইসলাম।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : dhakacrimenewsbd@gmail.com

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com